1. info@www.dainikamaralo.com : দৈনিক আমার আলো :
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বালুয়াকান্দী ইউনিয়নে বিশাল মিছিল করেন কাপ-পিরিচ মার্কার সমর্থকরা বালুয়াকান্দী ইউনিয়নে কাপপিরিচ মার্কার গণসংযোগ করেন মোসাম্মৎ তানিয়া আক্তার বালুয়াকান্দী ইউনিয়ে কাপপিরিচ মার্কার গণসংযোগ করেন মোসাম্মৎ তানিয়া আক্তার চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামে আগুনে পড়ে গেছে তিন হাজার থোর কলাগাছ জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অমান্য করে দেদারসে আতশবাজি ব্যবসা গজারিয়ার নিহত বন কর্মকর্তার পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা সহায়তা ভবেরচর ইউনিয়নে নির্বাচনী জনসংযোগ করেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জিন্নাহ্ গজারিয়া সম্ভাব্য মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হুমকি,থানায় অভিযোগ গজারিযা পুলিশ-ডাকাত গোলাগুলি, এক ডাকাত গ্রেফতার গজারিয়ায় টেংগারচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এর আয়োজনে নির্বাচনী সভা ও দোয়া মাহফিল

দাউদকান্দিতে  সুবিদ আলী ভূঁইয়া এমপির বিকল্প তিনি নিজেই।

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১১৩ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আলেক,স্টাফ রিপোর্টারঃ
মেজর জেনারেল (অবঃ) মোঃ সুবিদ আলী ভূঁইয়া পি,এস,সি ১৯৪৫ সালের ২৮ জুলাই কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার জুরানপুর গ্রামের প্রসিদ্ধ ভূঁইয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আঃ হালিম ভূঁইয়া, মাতা মরহুমা বেগম করিমুন্নেছা। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। জনাব ভূঁইয়ার পিতাসহ মরহুম জৈনউদ্দিন ভূঁইয়া দাউদকান্দি উপজেলার (বর্তমান তিতাস উপজেলা) অন্তর্গত  বলরামপুর ইউনিয়নের অধীনে গাজীপুর প্রসিদ্ধ ভূঁইয়া বাড়ি থেকে জুরানপুরে বসতি স্থাপন করেন। উল্লেখ্য, সোনারগাঁওয়ের শাসক বার ভূঁইয়াদের একজন পূর্ব পুরুষ গাজীপুর ভূঁইয়া বাড়ির প্রথম পুরুষ ছিলেন।
জেনারেল ভূঁইয়া শিক্ষা জীবন শুরু করেন ঝাঁউতলী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। পরে জামালকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান তিনি ৪ বছর অধ্যয়নের পর ১৯৬০ সালে দাউদকান্দি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৬২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই এ পাশ করেন। ১৯৬৫ সালে স্যার সলিমুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে বিএ (অনার্স) পাশ করেন। একই বছর তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। চাকরিকালীন ১৯৭৯ সালে তিনি মালয়েশিয়া থেকে কৃতিত্বের সাথে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ন পি,এস,সি, ডিগ্রী লাভ করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই সেনাবাহিনীতে কমিশন্ড অফিসার হিসেবে যোগদানের স্বপ্ন ছিল তাঁর। ১৯৬৫ সালে আইএসএসবিতে নির্বাচিত হয়ে পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমিক ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করলে তাঁর সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটে। এরপর ভূঁইয়া “বেলুচ রেজিমেন্ট” কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে কোয়েটার ৩৬নং বেলুচ রেজিমেন্ট সেকেন্ড লেফটেন্যান্স হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে ক্যাপ্টেন হিসেবে চট্টগ্রাম সপ্তম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। একই বছর তিনি চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে বদলি হন।
জেনারেল ভূঁইয়া বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম কাতারের একজন বীরসেনানী। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তখনকার সেই তরুন ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া দেশ ও জাতির আহবানে সারা দিয়ে পুরো নয় মাস জীবনবাজি রেখে বীরত্বের সাথে লড়াই করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম লড়াই ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক ‘কুমিড়ার লড়াই’ তাঁর নেতৃত্বেই হয়েছিল। যা মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে পাক হানাদার বাহিনীর কাছে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এই যুদ্ধে পাকিস্তানি কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্ণেল শাহপুর খান বখতিয়ার ও একজন লেফটেনেন্টসহ বিভিন্ন পদে ১৫২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। কুমিড়ার এই লড়াইটিই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্দে প্রথম ও মুখোমুখি রক্তক্ষয়ী সংঘষ। কুমিড়ার যুুদ্ধের এই সাফল্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে ২৯ মার্চ ১৯৭১ সালে তাঁর নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের ‘ “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র” থেকে একটা ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ঘোষণাটি ছিল ‘যার যার অস্ত্র নিয়ে লালদীর্ঘ ময়দানে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়ার কাছে রিপোর্ট করুন’। সেই দিনের সেই ঘোষণা আর ‘কুমিড়ার লড়াই’ আজ ইতিহাসের অংশ। জেনারেল ভূঁইয়া ৩নং সেক্টরের তেলিয়াপাড়া যুদ্ধেও অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। উল্লেখ্য, নয় মাসের যুদ্ধে কয়েকবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়ে মরতে মরতেই তিনি বেঁচে যান। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে চট্টগ্রামে মেজর জিয়াউর রহমান এবং পরে সিলেট অঞ্চলে মেজর সফিউল্লাহ নেতৃত্বে দেশ শত্রু মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত- যুদ্ধে লড়ে যান।
স্বাধীনতার পর আর দশকের মতো জেনারেল ভূঁইয়াও কঠিন শ্রম ও মেধা দিয়ে সেনাবাহিনীকে গড়ে তুলেন। দীর্ঘ ৩২ বছর সেনাবাহিনীতে সততা আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে চাকুরিকালীন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য।
১৯৮৮ সালের প্রলয়ঙ্করি বন্যায় তিনি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিগ্রেড কমান্ডার হিসেবে বন্যা প্লাবিত প্রায় ৩০ হাজার বন্যার্ত লোককে সেনানিবাসে আশ্রয়-সেবা দিয়ে মানবিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর এই ত্রাণ তৎপরতা বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকাতে প্রচারিত হয়। ঘাটাইলের এই ত্রাণ তৎপরতা বেশী পত্রিকাগুলোর পাশাপাশি নিউইয়র্ক টাইমস্‌, লন্ডন ডেইলি, অস্ট্রেলিয়ার দি এজ, ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন প্রতিবেদন ছাপায়। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে এই সংবাদ নিয়মিত প্রচার করা হয়।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক মহাদুর্যোগে সরকারের চীফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে জেনারেল ভূঁইয়া সেই মহাদুর্যোগের পরিস্থিতি  কাটিয়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন-যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। শতাব্দির প্রচন্ডতম জলোচ্ছ্বাসে গোটা জাতি যখন দিশেহারা, দু’লাখ লোকের মৃত্যুতে বিহবল তখন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও সমন্বয় সেলের মুখ্য সমন্বয়কারী হিসেবে ত্রাণ কর্মকান্ড অত্যন- দক্ষতার সাথে বিপুল ত্রাণ সামগ্রী, সরঞ্জাম, হেলিকপ্টার এবং জেনারেল স্ট্যাক পোলের নেতৃত্বে পৌছায় মার্কিন টাস্কফোর্সের এক সুবিশাল বাহিনী। তাদের অপারেশন ‘সী-এন্ডুলস্‌’ এর পাশাপাশি দেশী-বিদেশী সংস্থা ও মিশনের সাথে এদেশেরও বেসামরিক ত্রাণ তৎপরতায় সুষ্ঠু সমন্বয় ঘটিয়ে জনাব ভূঁইয়া আরও একবার দেশ সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত- স্থাপন করেন।
১৯৯৮-এর প্রলয়ঙ্করী বন্যায় তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগে দাউদকান্দির প্রত্যন্ত- দুগর্তদের পাশে সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তিনি। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় সাহস গুগিয়েছেন। সেই সময়ে বন্যার্তদের সেবায় দীর্ঘ ২৭ দিন ত্রাণ তৎপরতা চালান। ২০০৪-এর বন্যায়ও একই কর্মসূচী হাতে নেন। চাকরি জীবনে জেনারেল ভূঁইয়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ পর্যন- প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন আহমদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (১৯৯১-৯৬) সরকারের সময় প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করেন। ৫ বছর ৮ মাসই কেটেছে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসও হিসেবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অবঃ) মোঃ সুবিদ আলী ভূঁইয়া এমপি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ২৪৯ নং (কুমিল্লা-১) আসন থেকে ৩বারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং