, শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চরভদ্রাসনে বিনষ্ট যোগ্য ২৫৬ টি দলিল ধ্বংস করণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন চরভদ্রাসনে প্রতিবন্ধী অটোচালক ইব্রাহীমের জীবনে অন্ধকার — সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা প্রার্থনা চরভদ্রাসনে জন্মাষ্টমীতে সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন স্পেন বিএনপি নেতা ইউনুস প্রামানিক চরভদ্রাসনে যুবলীগ নেতা দিপু খালাসী ১দিনের রিমান্ডে চরভদ্রাসনে সরকারী রাস্তার ইট বেচে দিলেন প্রভাবশালী চরভদ্রাসনে বাদামের সিঙ্গারা খেতে ভীষণ সুস্বাদ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চরভদ্রাসন উপজেলা শাখার মতবিনিময় সভায় সদরপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত  চরভদ্রাসনে চরহাজীগঞ্জ বাজারে প্রশাসন মাইকিং করার পরও উচ্ছেদ হয়নি অবৈধ স্থাপনা চরভদ্রাসনে শ্রমিক দলের আয়োজনে সিনিয়র সহসভাপতি মরহুম আজিজুল ইসলাম বাবু মোল্লার স্মরণে এক দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত

চরভদ্রাসনে চরহাজীগঞ্জ বাজারে প্রশাসন মাইকিং করার পরও উচ্ছেদ হয়নি অবৈধ স্থাপনা

 

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী চরহাজীগঞ্জ বাজারে সম্প্রতী ব্যাঙের ছাতার মত যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। উক্ত বাজারের সরকারি খাস জমি জুড়ে একের পর এক গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। রাত পোহালেই দেখা যাচ্ছে বাজারের ফুটপাত জুড়ে স্থাপনা, প্রধান সড়ক ঘেষে টোং দোকান, যাত্রী ছাউনি ঘিরে স্থাপনা এবং বাজারের শতবর্ষীয় বট বৃক্ষের পাকা চত্ত্বর ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রতি হাটবারে বাজার ঘেষে পাকা সড়কের ওপর বসছে ফল ও কাচা বাজার। এতে হাটের দিনে উক্ত বাজারের রাস্তায় যান চলাচলতো দুরের কথা পায়ে হাটার পথটুকুও বন্ধ থাকছে।

তাই প্রায় ১৫ দিন আগে বাজারের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাত দিয়ে বার বার মাইকিং করেন প্রশাসন। কিন্তু সরকারি এ নির্দেশনা কেউ মানছেন না। তবুও প্রশাসন চুপ রয়েছেন। এমনকি, গত ২৮ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন উক্ত বাজার পরিদর্শন করে বিকেল ৪টার মধ্যে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেন। তারপরও দখলদাররা বহাল তবিয়তে তাদের ব্যাবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। ফলে দখলদারদের কবলে পড়ে তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বাজারের ক্রেতা বিক্রেতারা। সেই সাথে একে অপরের দেখাদেখিতে বাজারের খাসজমি দখলের যেন প্রতিযোগীতায় নেমেছেন এলাকাবাসী।

সোমবার এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন বলেন, “আমি উপজেলার চরহাজীগঞ্জ বাজার পরিদর্শন করেছি এবং অবৈধ দখলদারদের তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলেছি। কিন্ত অনেকেই রুটি রুজির অজুহাতে স্থাপনা অপসারন করে নাই। তাই দখলদারদের পূনর্বাসনের বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের উচ্ছেদ করার করার কথা ভাবছি”।

আর উক্ত বাজার বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি কবিরুল আলম জানান,“অত্র বাজারের অবৈধ দখলদারদের পূনর্বাসন করার মত যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। তাদের যখণ তখন সরিয়ে আনা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারি রাস্তা ঘেষে স্থাপনা, বটগাছের বাউন্ডারী ও পথিকদের আশ্রয়স্থল যাত্রী ছাউনি জুড়ে স্থাপনা সরিয়ে নিতে আমি বার বার অনুরোধ করেছি । কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছেন না। ফলে অত্র বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে এখন আর দাড়াবার বা বসার মত কোনো জায়গা নাই”।

এ সময় আমজাদ বেপারী নামক এক এলাকাবাসী জানায়,“ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে শতবর্ষীয় বটগাছের অনেক আদি ঐতিহ্য রয়েছে। এই বাজারের সমস্ত রাজনৈতিক সভা, এলাকায় খিয়েটার, নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো এই বটমূলে অনুষ্ঠিত হতো। দখলদাররা সেই বট চত্ত্বরে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে এলাকার বিনোদন টুকুও কেড়ে নিয়েছে”।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উক্ত বাজারে রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। এসব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের কিছু ব্যাক্তি মালিনাধীন জমিতে বাকী সবগুলো দোকান ঘর সরকারি খাস জমিতে গড়া হয়েছে। ওই বাজারে একসনা সরকারি বন্দোবস্তো দেওয়া দোকান ঘর রয়েছে মাত্র দশটি। বাকী সবগুলো ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সরকারি খাস জমি দখল করে রাতের আধারে গড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এসব অবৈধ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেদের মধ্যে অনেকে আবার দুই চারটি করে দোকান উঠিয়ে ভাড়া খাচ্ছেন। ওই বাজারে অবৈধ দখলদারদের মধ্যে বাজারের প্রাণকেন্দ্রে বটচত্ত্বর জুড়ে শেখ ফজলের দখলে রয়েছে দুইটি ফলের দোকান, একটি মুদি মনোহারী ও একটি শিশুদের খেলনার দোকান। এছাড়া বাজারে সরকারি জায়গা জুড়ে রয়েছেন শেখ আকতারের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, মুজিবর বেপারীর দোকান, জহুরুল বেপারী, জিল্লুর রহমান, শেখ জাহিদ, দিগেন সরকার, চানমিয়া বিশ্বাস, ফরহাদ বেপারী, দাইমুদ্দিন শেখ, মজিবর বেপারী, শফি বেপারী, নিমাই সরকার, প্রশান্ত সরকার, শেখ লাভলু ও মোতালেব খানের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনার ব্যাপারে গাজীরটেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াকুব আলী বলেন, “চরহাজীগঞ্জ বাজারের বিষয়ে আমি নাখ গলাতে চাই না। তবে উক্ত বাজারের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা ও অবৈধ স্থাপনা অপসারনের ব্যপারে উপজেলার বিভিন্ন মিটিংয়ে আমি বার বার উল্লেখ করেছি। কিন্ত কোনো কাজ হয় নাই”।

জনপ্রিয়

চরভদ্রাসনে বিনষ্ট যোগ্য ২৫৬ টি দলিল ধ্বংস করণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন

চরভদ্রাসনে চরহাজীগঞ্জ বাজারে প্রশাসন মাইকিং করার পরও উচ্ছেদ হয়নি অবৈধ স্থাপনা

প্রকাশের সময় : ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫

 

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী চরহাজীগঞ্জ বাজারে সম্প্রতী ব্যাঙের ছাতার মত যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। উক্ত বাজারের সরকারি খাস জমি জুড়ে একের পর এক গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। রাত পোহালেই দেখা যাচ্ছে বাজারের ফুটপাত জুড়ে স্থাপনা, প্রধান সড়ক ঘেষে টোং দোকান, যাত্রী ছাউনি ঘিরে স্থাপনা এবং বাজারের শতবর্ষীয় বট বৃক্ষের পাকা চত্ত্বর ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রতি হাটবারে বাজার ঘেষে পাকা সড়কের ওপর বসছে ফল ও কাচা বাজার। এতে হাটের দিনে উক্ত বাজারের রাস্তায় যান চলাচলতো দুরের কথা পায়ে হাটার পথটুকুও বন্ধ থাকছে।

তাই প্রায় ১৫ দিন আগে বাজারের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাত দিয়ে বার বার মাইকিং করেন প্রশাসন। কিন্তু সরকারি এ নির্দেশনা কেউ মানছেন না। তবুও প্রশাসন চুপ রয়েছেন। এমনকি, গত ২৮ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন উক্ত বাজার পরিদর্শন করে বিকেল ৪টার মধ্যে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেন। তারপরও দখলদাররা বহাল তবিয়তে তাদের ব্যাবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। ফলে দখলদারদের কবলে পড়ে তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বাজারের ক্রেতা বিক্রেতারা। সেই সাথে একে অপরের দেখাদেখিতে বাজারের খাসজমি দখলের যেন প্রতিযোগীতায় নেমেছেন এলাকাবাসী।

সোমবার এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন বলেন, “আমি উপজেলার চরহাজীগঞ্জ বাজার পরিদর্শন করেছি এবং অবৈধ দখলদারদের তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলেছি। কিন্ত অনেকেই রুটি রুজির অজুহাতে স্থাপনা অপসারন করে নাই। তাই দখলদারদের পূনর্বাসনের বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের উচ্ছেদ করার করার কথা ভাবছি”।

আর উক্ত বাজার বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি কবিরুল আলম জানান,“অত্র বাজারের অবৈধ দখলদারদের পূনর্বাসন করার মত যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। তাদের যখণ তখন সরিয়ে আনা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারি রাস্তা ঘেষে স্থাপনা, বটগাছের বাউন্ডারী ও পথিকদের আশ্রয়স্থল যাত্রী ছাউনি জুড়ে স্থাপনা সরিয়ে নিতে আমি বার বার অনুরোধ করেছি । কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছেন না। ফলে অত্র বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে এখন আর দাড়াবার বা বসার মত কোনো জায়গা নাই”।

এ সময় আমজাদ বেপারী নামক এক এলাকাবাসী জানায়,“ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে শতবর্ষীয় বটগাছের অনেক আদি ঐতিহ্য রয়েছে। এই বাজারের সমস্ত রাজনৈতিক সভা, এলাকায় খিয়েটার, নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো এই বটমূলে অনুষ্ঠিত হতো। দখলদাররা সেই বট চত্ত্বরে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে এলাকার বিনোদন টুকুও কেড়ে নিয়েছে”।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উক্ত বাজারে রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। এসব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের কিছু ব্যাক্তি মালিনাধীন জমিতে বাকী সবগুলো দোকান ঘর সরকারি খাস জমিতে গড়া হয়েছে। ওই বাজারে একসনা সরকারি বন্দোবস্তো দেওয়া দোকান ঘর রয়েছে মাত্র দশটি। বাকী সবগুলো ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সরকারি খাস জমি দখল করে রাতের আধারে গড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এসব অবৈধ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেদের মধ্যে অনেকে আবার দুই চারটি করে দোকান উঠিয়ে ভাড়া খাচ্ছেন। ওই বাজারে অবৈধ দখলদারদের মধ্যে বাজারের প্রাণকেন্দ্রে বটচত্ত্বর জুড়ে শেখ ফজলের দখলে রয়েছে দুইটি ফলের দোকান, একটি মুদি মনোহারী ও একটি শিশুদের খেলনার দোকান। এছাড়া বাজারে সরকারি জায়গা জুড়ে রয়েছেন শেখ আকতারের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, মুজিবর বেপারীর দোকান, জহুরুল বেপারী, জিল্লুর রহমান, শেখ জাহিদ, দিগেন সরকার, চানমিয়া বিশ্বাস, ফরহাদ বেপারী, দাইমুদ্দিন শেখ, মজিবর বেপারী, শফি বেপারী, নিমাই সরকার, প্রশান্ত সরকার, শেখ লাভলু ও মোতালেব খানের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনার ব্যাপারে গাজীরটেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াকুব আলী বলেন, “চরহাজীগঞ্জ বাজারের বিষয়ে আমি নাখ গলাতে চাই না। তবে উক্ত বাজারের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা ও অবৈধ স্থাপনা অপসারনের ব্যপারে উপজেলার বিভিন্ন মিটিংয়ে আমি বার বার উল্লেখ করেছি। কিন্ত কোনো কাজ হয় নাই”।